খুবই উঁচু মানের প্রশ্ন। বিষয়টি গবেষণাধর্মী, তবে আমি সংক্ষেপে এখানে আলোচনা করব।
আপনারা নিঃসন্দেহে এটা জানেন, বর্তমান ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্যযুগ, এমন কী আধুনিক ইংরেজ শাসনকাল পর্যন্ত ভারত নামেই পরিচিত ছিল। কাজেই তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে শিক্ষা বলতে অবিভক্ত ভারতের শিক্ষার ইতিহাসকেই বলা হয়ে থাকে। ধন সম্পদের দিক থেকে এ উপমহাদেশ ঐশ্বর্যশালী ছিল।
প্রাচীন ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল ধর্মকেন্দ্রিক। যুগ বিভাগ অনুযায়ী প্রাচীন ভারতের শিক্ষার তিনটি স্বতন্ত্র পর্যায় দেখতে পাওয়া যায়ঃ
প্রাক-ঋক বেদ যুগ (আর্যদের আগমনের পূর্বে), ঋকবেদ যুগ (আর্য সভ্যতার প্রাথমিক কাল) এবং ব্রাহ্মণ্য শিক্ষার যুগ।
- প্রাক-ঋক বেদ যুগঃ প্রাক-ঋক বেদ যুগের সবচেয়ে বড় সভ্যতা সিন্ধু সভ্যতায় অনেক উন্নত মানের নিদর্শন পাওয়া যায়। অনেক মন্দির এখানে ছিল শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে। মন্দিরের পুরোহিতগণ অনেক জ্ঞানী ছিলেন, লিপি পরিচয়, লিপি লিখন মূলত শিক্ষা কার্যক্রমের বিষয় ছিল।
- ঋক বেদ যুগ বা আদি বৈদিক শিক্ষাঃ এই সময়ে বৃহত্তর সামাজিক ক্ষেত্রে শিক্ষা-দীক্ষার ভার ন্যস্ত ছিল পুরোহিতদের উপর। তারাই মূলত শিক্ষার বাহক ছিলেন। এইসব পুরোহিত এবং ঋষিদের প্রজ্ঞা এবং আধ্যাত্মিক চিন্তা অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল ছিল।
- ব্রাহ্মণ্য শিক্ষার যুগঃ শিক্ষার্থীদের বয়স ৫ বছর হলে বিদ্যারাম্ভ বা অক্ষর-স্বীকারণম্ অনুষ্ঠানের মাধমে শিক্ষা জীবন শুরু হত। মানব জীবনকে চতুরাশ্রমে বিভক্ত করা হত। যথা-
- ব্রাহ্মচর্যঃ (পাঁচ স্তরে বিভক্ত ছিল, ১) ৫ বছর বয়সে অক্ষর চেনা বা বিদ্যারম্ভ বা হাতেখড়ি, ২) উপনয়ন বা আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষায় প্রবেশ, বিদ্যারাম্ভ অনুষ্ঠানের পর হত উপনয়ন। এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানিক শিক্ষায় প্রবেশ ঘটত। ব্রাহ্মম বালকদের ৮, ক্ষত্রিয়দের ১১ এবং বৈশ্যদের ১২ বছর বয়সে উপনয়ন হত। ৩) প্রবেশ বা অভিষেক অনুষ্ঠান, ৪) শিক্ষার কাল ছিল একাধারে ১২ বছর, ৫) সমাবর্তন বা বিদায়ী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পিতৃগৃহে প্রত্যাবর্তন ও গার্হস্থ জীবনে প্রবেশ।
- গার্হস্থঃ ছাত্র জীবনের শেষে বিবাহিত সংসার জীবনই গার্হস্থ জীবন।
- বানপ্রস্থঃ সংসার ধর্ম পালনের পর বনে জঙ্গলে তপস্যায় ধর্ম-কর্ম পালন অবস্থা।
- সন্ন্যাসঃ বানপ্রস্থ শেষে পরমাত্মার ধ্যানে নিমগ্ন ঋষি জীবনই সন্যাস জীবন।
মানসিক উৎকর্ষের মানদণ্ডে ছাত্রদের শ্রেণীবিভাগ করা হতো উত্তম প্রজ্ঞা, মধ্যম প্রজ্ঞা, এবং অল্প প্রজ্ঞা। বৈদিক যুগে শ্রবণ ও আবৃতিই শিক্ষার প্রধানতম পদ্ধতি ছিল।
শিক্ষা কাঠামোঃ আশ্রম বা গুরুগৃহ ছিল শিক্ষা কেন্দ্র। মুখস্থ, প্রশ্নোত্তর এবং আলোচনা ও বিকর্ত ছিল মুলত পদ্ধতি।
এই সময়ে শিক্ষার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য ছিল গুরু শিক্ষা ব্যবস্থা। গুরু শিক্ষার্থীকে পুত্রের মতো মনে করতেন এবং ছাত্রকে কঠোর নিয়ম অনুযায়ী থাকতে হতো। গুরুর প্রতি তার অনুগত ছিল অগাধ, গুরু না ঘুমালে ঘুমানো যাবে না, আবার গুরুর আগে ঘুম থেকে উঠতে হতো। গুরুর অনেক কাজ করে দিতে হতো। গুরু সামনে আসলে উঠে দাঁড়াতে হত। গুরুর পিছনে চলতে হতো। এসময়ে শিক্ষদের দুটি প্রকার ছিল আচার্য এবং উপাধ্যায়। আচার্যগণ শিক্ষার জন্য অর্থ নিতেন না, কিন্তু উপ্যাধায়গণ অর্থ গ্রহণ করতেন।
বৌদ্ধ শিক্ষা
বৌদ্ধ শিক্ষা ছিল ধর্মভিত্তিক। তারা শিক্ষাকে নির্বাণ লাভের উপায় হিসেবে গণ্য করতো। অচিরেই বৌদ্ধ শিক্ষা ভারতে সর্বজনীন শিক্ষায় পরিণত হয়।
সঙ্গরাম বা বিহার বা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল শিক্ষা কেন্দ্র। শিক্ষাস্তর ছিল ন্মিরুপঃ
- ৮ বছর বয়স পর্যন্ত বৌদ্ধ শিশু পিতৃগৃহে শিক্ষা লাভ করত।
- ৮ বছর পর ভর্তির উদ্দেশ্যে মস্তকমুণ্ডপূর্বক বিশেষ গেরুয়া বস্ত্রে সঙ্গরাম বা ভর্তি পরীক্ষার্থী হিসেবে পন্ডিতের সম্মুখীন হত।
- পূজা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মঠে কঠোর ছাত্র-জীবন আরম্ভ করত।
- ১২ বছর শিক্ষালাভের পর উত্তীর্ণ ছাত্রকে উপ-সম্পদা উপাধি প্রদান করা হত।
- আরও ১০ বছর পর উপাধ্যায় উপাধি অর্জিত হত।
- আরও ১০ বছর পর অধ্যয়নের পর ভিক্ষু বলে গণ্য হত।
- আজীবন সাধনা করে কদাচিত আচার্য উপাধি লাভ করত।
প্রাচীন ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সোমপুর বৌদ্ধ বিহারে লেখক সস্ত্রীক। পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল দেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত। পাহাড়পুরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা যেতে পারে। আয়তনে এর সাথে ভারতের নালন্দা মহাবিহারের তুলনা হতে পারে। (উইকিপিডিয়া)
প্রাচীন ভারতের শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহঃ
- টোলঃ টোলগুলিতে প্রাচীন হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্র এবং সংস্কৃত সাহিত্যপড়ানো হত। টোলগুলি ছিল মাধ্যমিক শিক্ষাসহ উচ্চ শিক্ষার বিদ্যাপীঠ। সেখানে সংস্কৃত ভাষায় পড়ানো হতো এবং ঐতিহ্যবাহী ধ্রুপদী শিক্ষা দেওয়া হতো।
- বৌদ্ধ বিহারঃ প্রধানত বৌদ্ধ ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভিক্ষুদের বাসস্থান, ধর্মীয় আচারাদি সম্পন্ন ও ধ্যান করার স্থান এবং বৌদ্ধ শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে একে চিহ্নিত করা যায়।
- পাঠশালাঃ পাঠশালা ছিল সাধারণ প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে সকল শ্রেণীর ছাত্ররা পড়াশুনা করত।
- মক্তবঃ মুসলিম প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র। কোরআন, ধর্মীয় শিক্ষা প্রভৃতির সঙ্গে লিপিশিক্ষ, গণিত শিক্ষাও দেয়া হত।
- মাদ্রাসাঃ মুসলিম উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্র। ব্যকরণ, ছন্দ, তর্কশাস্ত্র, বিচার ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেয়া হত।
প্রাচীন ভারতের গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ
- মিথিলা ও নবদ্বীপঃ উপনিষদ ও মহাকাব্যের যুগে মিথিলা ছিল ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি প্রাণ কেন্দ্র। আর বাংলায় সেন রাজাদের আমলে (১১৫৯ - ১২০৬) নবদ্বীপ ছিল রাজধানী। নবদ্বীপ ছিল সেই সময়ে বিদ্যালাভের পীঠস্থান ও একে বলা হত বাংলার অক্সফোর্ড।
- তক্ষশীলা ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজ্য গান্ধারের রাজধানী ছিল তক্ষশীলা। উপনিষদ থেকেও তক্ষশীলার বিদ্যা খ্যাতির কথা জানা যায়। তক্ষশীলা কখনো কখনো পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় বিবেচিত হয়ে থাকে। কৌটিল্য (কৌটিল্য বা চাণক্য খ্রিস্টপূর্ব ৩৭০-২৮৩ অব্দ, প্রাচীন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও রাজ-উপদেষ্টা) এবং জীবক (শৈল্য চিকিৎসক) এখানকার কৃতি ছাত্র ছিলেন। কৌটিল্য তার অর্থশাস্ত্র এখানে রচনা করেছিলেন বলে কিংবদন্তি আছে।
তক্ষশীলা (বর্তমানে পাঞ্জাব প্রদেশ, রাওয়ালপিন্ডি পাকিস্তান )
- নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচিন ভারতের শিক্ষাকেন্দ্রগুলোর মধ্যে নালান্দা শিক্ষা, গৌরব, আয়তন, এবং খ্যাতির শীর্ষে ছিল। নালন্দায় ভারত ছাড়াও তিব্বত, চীন, কোরিয়া ও মধ্য এশিয়ার পণ্ডিত ও ছাত্ররা অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা করতে আসতেন। নালান্দায়, ১) চর্তূবেদ, ২) হীনযান শাস্ত্র, ৩) মহাযান ও অষ্টাদশ শাখার ত্বত্ত্বসমূহ, ৪) ন্যায়শাস্ত্র ৫) ব্যকারণ, ৬) রসায়ন, ৭) চিকিৎসাবিদ্যা, ৮) যাদুব্যিা, ৯) যোগশাস্ত্র ১০) জ্যাতিষ শাস্ত্র ১১) ব্যবহারিক শাস্ত্র, ১২) শিল্প বিদ্যা, ১৩) ধাতু বিদ্যা ১৪) তান্ত্রিক বৌদ্ধশাস্ত্র সাবজেক্টসমূহ পড়ানো হত।
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজগির, বিহার, ভারত।
- বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয়: রাজা ধর্মপাল (৭৮৩ থেকে ৮২০) বিক্রমশীলার প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মঠাধ্যক্ষদের মধ্যে প্রখ্যাত বৌদ্ধ ভীক্ষু শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর উল্ল্যখযোগ্য। অতীশ দীপঙ্কর বাংলাদেশের বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি প্রখ্যাত বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারক ছিলেন।
বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তিচক, জেলা ভাগলপুর, বিহার।
- বলভী বিশ্ববিদ্যালয়ঃ শিক্ষা সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল শিক্ষা সংস্কৃতির পীঠস্থান এবং নালন্দার মতোই তাঁর খ্যাতি বহুদূর বিস্তৃত ছিল।
এছাড়া পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বা সোমপুর বিহার বা সোমপুর মহাবিহার, শালবন বৌদ্ধ বিহার, বিক্রমপুর বিহার উল্লেখযোগ্য বৌদ্ধ বিহার ছিল। তবে এসকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া বর্তমান সময়ের মতই বেশ প্রতিযোগিতাপূর্ণ ছিল।
মুসলমান আমলে শিক্ষাঃ
মুসলমান আমলে শিক্ষার বিভিন্ন স্তর ও প্রধান প্রধান দিকগুলো হলঃ
- প্রাথমিক শিক্ষা: মধ্যযুগে মুসলিম শাসিত ভারতে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা মক্তবগুলোতে সম্পন্ন হত। এ ধরনের মক্তব বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিচালিত হত মসজিদগুলোতে। সাধারণভাবে, সাত বছর বয়সে মক্তবের শিক্ষা শুরু হত; তবে শিশুর বয়স চার বছর পুরো হলেই ‘সবক্’ বা হাতেঘড়ি প্রদানের ব্যবস্থা ছিল। শিক্ষা পদ্ধতিতে মুখস্থ করানোর ওপর জোর দেওয়া হত। শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে পড়ো সর্দার পাঠদান পরিচালনা করত। পড়ো সর্দার ছিল অগ্রগামী শিক্ষার্থী দ্বারা পাঠদান ব্যবস্থা। বস্তুত পড়তে ও লিখতে পারা এবং হিসাব নিকাশ জানার মধ্যেই মক্তবের শিক্ষা সীমিত ছিল।
- উচ্চ শিক্ষা: উচ্চ শিক্ষার জন্য সুলতান ও সম্রাটগণ ভারতের বিভিন্ন শহরগুলোতে মাদ্রাসা স্থাপন করেছিলেন। মাদ্রাসাগুলো সাধারণভাবে স্থাপিত হয়েছিল মসজিদের কাছাকাছি। এ সকল মাদ্রাসায় ব্যাকরণ, ধর্মতত্ত্ব, তর্কবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি বিষয় পড়ানো হত। উচ্চ শিক্ষার একটি প্রধান দিক ছিল আরবি, ফারসি ও উর্দু সাহিত্যের চর্চা। উচ্চ শিক্ষার বিষয় হিসেবে ইতিহাসও বিশেষ গুরুত্ব লাভ করে। বস্তুত মুঘল আমল থেকেই ইতিহাস চর্চার সূচনা ঘটে। সম্রাটদের অনেকেই সমকালীন নানা বিষয় এবং আত্মজীবনী গ্রন্থাগারে লিপিবদ্ধ করে গেছেন।
এসময়ে দিল্লী, আগ্রা, ফিরোজপুর, জৈনপুর, আহমেদাবাদ প্রভৃতি স্থানে ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল।
সম্রাট আকবরের আমলে মহাভারত, রামায়ন, হরিবংশ, অথর্ববেদ, নলদময়ন্তি উপখ্যান, বত্রিশ সিংহাসন প্রভৃতি অনুবাদ হয়। খ্রিস্টানদের সুসমাচারও অনুবাদ হয়। ফাতেহপুর সিক্রিতে তিনি ইবাদত খানা নির্মান করেন যেখানে ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হত। তবে আকবর নিরক্ষর ছিলেন।
আকবরের সময় মাদ্রাসা শিক্ষাক্রমে কৃষি শিক্ষা, জরীপ, নীতি, গণিত, জ্যোতিবিদ্যা, শাসন বিদ্যা, শরীর বিদ্যা, চিকিৎসা, তর্কশাস্ত্র, ইতিহাস, গার্হস্থ্য বিদ্যা এগুলো অন্তর্ভূক্ত হয়। সংস্কৃত শিক্ষার্থীদের তিনি ব্যকরণ, ন্যায়, বেদান্ত, পতঞ্জলী পাঠের ব্যবস্থা করেন। তার সময়ে মাদ্রাসায় হিন্দু ছাত্রদের প্রবেশাধীকার ছিল।
নারী শিক্ষা
মুঘল আমলে নারী শিক্ষা একটি স্বতন্ত্র শিক্ষাধারা হিসেবে পরিগণিত হয়। উচ্চবংশীয় মেয়েরা শিক্ষার সুযোগ লাভ করত এবং অন্তঃপুরে নারীদের জন্য বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা করা হত। সম্রাট আকবর মেয়েদের জন্য পৃথক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। অনেকে নিজেদের ঘরে বসে শিক্ষকদের কাছ থেকে পাঠ গ্রহণ করত। মুঘল আমলে অনেক সুশিক্ষিত নারীর পরিচয় মেলে। সম্রাট বাবরের কন্যা গুলবদন ‘হুমায়ন নামা’ রচনা করেন। সলিনা সুলতানা উঁচুস্তরের কবি ছিলেন।
মুঘলদের পর ইংরেজ শাসনে ভারত চলে যায়। কোম্পানী আমল থেকেই শুরু হয় ইংরেজী শিক্ষার প্রাধান্য। তারপর ধীরে ধীরে ভারত এগিয়ে চলে আধুনিক শিক্ষা কার্যক্রমে। তবে একথা ভালোভবেই বলা যায় যে প্রাচীন ভারতে শিক্ষা কার্যক্রম বিশ্বের মধ্যে বেশ উল্লেখযোগ্য ছিল। যেহেতু প্রশ্নটিই প্রাক-ইংরেজ আমলের শিক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত, তাই আজকে এই পর্যন্ত থাক। পরে আবার কথা হবে ধন্যবাদ।
তথ্য কৃতজ্ঞতাঃ
https://opinion.bdnews24.com/bangla/archives/1466
Historical and Sociological Foundation of Education, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
মাধ্যমিক শিক্ষা - বাংলাপিডিয়া
No comments