একটু আগে মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের বড় নিউজ নেটওয়ার্কগুলো জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে এবং ট্রাম্পের lawsuit গুলো কোন কোর্টে টিকবে না তাই বাইডেন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে তা bipartisan support পায়, মানে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দুটো পার্টি ভারতের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের পক্ষে। তাই প্রেসিডেন্ট বদল হলেও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের কোন বড় রদবদল আমরা দেখবো না।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট বদলের বেশ কিছু পরক্ষ প্রভাব পরবে ভারতের বিদেশ নীতি তে।
সব থেকে উল্লেখযোগ্য যে প্রভাব পরবে বলে মনে হয় তা হল ভারত এবং ইরানের সম্পর্কে। কিছুদিন আগেও ভারত এবং ইরানের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভারত ইরানের তেলের প্রধান ক্রেতা ছিল। কিন্তু ট্রাম্প US-Iran Nuclear Deal ভেঙে বেড়িয়ে আসে যার ফলে দুই দেশের সম্পর্কের আরো অবনতি হয়। ভারত যেহেতু এখন অনেকটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে হেলে পড়েছে এই অবস্থায় ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ খারাপ হয়েছে। এই কারণে চাবাহার পোর্ট এ ভারতের রেললাইন তৈরি করার কথা থাকলেও ইরান সেই দায়িত্ব চীনকে দিয়ে দিয়েছে। এটা ইরানের ইশারা ছিল যে সম্পর্কের অবনতি হলে চাবাহার থেকে পুরোপুরি ভাবে ভারতকে বাদ দেওয়া হবে।
বাইডেন যেহেতু ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং ওবামার আমলে ইরানের সঙ্গে সমঝোতা হয় তাই বাইডেন সেই চুক্তিতে ফিরে যাবেন বা নতুন পরিস্থিতিতে নতুন কোন চুক্তি করবেন আগের চুক্তির মত। এর ফলে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতির আশা করা যায় এবং এর ফলে ভারত ইরানের সম্পর্কে উন্নতি হবে বলে আমার ধারণা।
ইরানের ও ইসরয়েলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক জরুরি তাই এটা ভারতের জন্য সুখবর বলা যেতে পারে।
এছাড়াও চীনের সঙ্গে বাইডেন ট্রাম্পের মত অতটা কড়া হবে না বলে আশা করা যায়। সেক্ষেত্রে ভারত চীন কথাবার্তার মাধ্যমে সম্পর্কের উন্নতি করতে পারে। যেমন সম্প্রতি Quad meet এ মার্কিন বিদেশ সচিব চীনের লাদাখে আগ্রাসনের কড়া নিন্দা করলেও ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এই নিয়ে চুপ ছিলেন। এতে বোঝা যাচ্ছে ভারত চায় চীনের সঙ্গে সমস্যার সমাধান করতে। বাইডেন প্রেসিডেন্সি তে এটা হয়েতো সম্ভব হবে।
তবে মোদি সরকারের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের কিছু মতবাদের অমিল হতে পারে। ট্রাম্প মানবাধিকার নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না তাই কাশ্মীর বা ভারত সরকারের আপাতদৃষ্টিতে মুসলিম বিরোধী মনভাব নিয়ে ট্রাম্প কোন মন্তব্য করেনি। In fact তিনি ভারতের এই মনভাবকে একরকম support করেছেন। কিন্তু বাইডেন অন্য ধরনের মানুষ হওয়ায় যদি ভারতে এমন কিছু হয় যা মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করা যেতে পারে তবে সেটা নিয়ে বাইডেন সরব হতে পারেন ও অবস্থা বিশেষ এ কূটনৈতিক চাপ ও দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভারত সরকারকে আপাতদৃষ্টিতে মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপের থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে নয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে হবে।
তবে বাইডেন ট্রাম্পের মত দক্ষিণপন্থী নন এবং অভিবাসনের ব্যাপারে তিনি অনেকটা ছাড় দেবেন বলে আশা করা যায় এর ফলে ভারতয়ীদের মার্কিন work visa পেতে সুবিধা হবে এবং ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর লাভ হবে।
কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও তিনি তার black identity কে বেশি প্রাধান্য দেন তাই তিনি নিজেকে বেশি কৃষ্ণাঙ্গ মনে করেন ভারতীয়র থেকে তাই সেদিকে দিয়েও বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে না। তাই বলার জন্য মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
তাই দেখতে গেলে ভারতের জন্য বাইডেন প্রেসিডেন্সি ভালোই হবে বলে মনে হয়।
No comments